ফ্রিল্যান্সিং শিখুন খুব সহজেই

ফ্রিল্যান্সিং। টেলিভিশন, পত্রিকা ও বিভিন্ন ফ্রিল্যান্সারদের আর্নিং এর স্কিনশর্ট দেখে আজকাল ফ্রিল্যান্সিং নামটা শুনলেই মনে হয় এই সেক্টরে শুধু ডলার আর ডলার। আসলে বাস্তবেই তাই। যারা এই সেক্টরে রাজত্ব করছে। তাদের মানিব্যাগ, ড্রয়ারে ইভেন বালিশের নিচেও ডলার পাবেন। 

যদিও চিন্তা ভাবনা খুব সহজে করা যায়, কিন্তু ফ্রিল্যান্সিং কি তাহলে আসলেই খুব সহজ? না মোটেও না। যারা এই সেক্টরে রাজত্ব করছে, তাদের ব্যাকগ্রাউন্ড একটু জানার চেষ্টা করবেন। তারা দুই দিনে, দুই মাসে বা দুই বছরে এই অবস্থানে চলে আসে নাই। দীর্ঘদিনের পরিশ্রম, মেধা বিভিন্ন স্ট্রেটিজির মাধ্যমে তারা তাদের অবস্থান তৈরী করে নিয়েছে। 

ওকে, তাহলে ফ্রিল্যান্সিং কি! ফ্রিল্যান্সিং হচ্ছে জাস্ট একটা পেশা। যেটা আমরা মুক্ত পেশা হিসেবেও চিনি। আর মুক্ত পেশা অনেকেই করে। যেমন আমরা যারা অনলাইনে বিভিন্ন ক্লায়েন্টের কাজ করি তারা নিজেকে ফ্রিল্যান্সার দাবী করতে পারে, একজন রিকশা চালক নিজেকে ফ্রিল্যান্সার দাবী করতে পারে, এমনকি কক্সবাজারে বা বিভিন্ন প্লেসে যারা ফটোগ্রাফি করে তারাও নিজেকে ফ্রিল্যান্সার দাবী করতে পারে। এরকম অনেক উদাহরন দেয়া যাবে। কারন এখানে তারা প্রত্যেকেরই মুক্ত পেশা। মন চাইলে কাজ করবে, না চাইলে না। যখন ইচ্ছে তখন কাজ করবে, যখন ইচ্ছে না তখন করবে না। 

এখানে আপনাকে যেই ক্যাটাগরিতেই কাজ করার ইচ্ছে থাকুক না কেনো, আগে আপনাকে সেই বিষয়ের উপরে এক্সপার্ট হয়েই কাজে নামতে হবে। কারন আপনি যেই ক্যাটাগরিতেই কাজ করার ইচ্ছে পোষন করেন না কেনো। এখানে প্রতিটা ক্যাটাগরিতেই কম্পিটিটর। আর সেটা গ্রাম, শহর, বা দেশের ভিতরে নয়। এখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের এক্সপার্ট ফ্রিল্যান্সারদের সাথে আপনাকে টক্কর দিতে হবে। অনেকে কাজ শিখার আগেই বা বেসিক কাজ শিখেই মার্কেটপ্লেসে নেমে যান। পরে দীর্ঘদিন ভোগান্তির স্বীকার হতে হয়ে। আমি নিজেও এই ভোগান্তির স্বীকার হয়েছিলাম। বেসিক কাজ শিখেই নিজেকে এক্সপার্ট ভাবা শুরু করেছিলাম। পরে যার কারনে প্রায় ১ বছরেরও বেশি সময় লেগেছিলো নিজেকে ক্লায়েন্টেদের সামনে তুলে ধরার। 

ফ্রিল্যান্সিং মূলত শিখার মতো কিছু না। আপনাকে আপনাকে নির্দিষ্ট ক্যাটাগরি বা সাবজেক্টের উপর এক্সপার্ট হতে হবে। সেটা হতে পারে গ্রাফিক্স ডিজাইন, অডিও ভিডিও এডিটিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, ডিজিটাল মার্কেটিং বা রাইটিং ইত্যাদি। এই সেক্টরে কাজের কোনো অভাব নেই। আপনার অনেক বুদ্ধি থাকলে, বুদ্ধির সাথে মানুষকে পরামর্শ দিয়েও আনিং করতে পারবেন। আপনি লেখালেখিতে ভালো হলে কন্টেন্ট রাইটিং এর কাজ করতে পারেন। এজন শিক্ষক যেমন শিক্ষকতা শিখতে পারেন না, বরং কোনো সাবজেক্টের ওপর ডিগ্রী অর্জন করে তারপর যখন কোনো স্কুলে বা কলেজে জয়েন করার পর তাকে শিক্ষক বলা হয়। একই ভাবে ফ্রিল্যান্সিং একটা পেশার নাম মাত্র।

অনেক ইন্সটিটিউট দেখি “এখানে ফ্রিল্যান্সিং শিখানো হয়” ট্যাগ লাইনে ফেসবুকে বা রাস্তার মোড়ে ব্যানার টাঙ্গানো। আমি ভাবছি তারা কিভাবে মানুষকে ফ্রিল্যান্সিং শিখায়, নাকি পাবলিক এটেনশন পাওয়ার জন্য এমন করে। নাকি আদৌ তারা ফ্রিল্যান্সিং কি সেটা বুঝে? ফ্রিল্যান্সিংকে তারা যতটা সহজভাবে পাবলিকের সামনে তুলে ধরে ফ্রিল্যান্সিং ততোটা সহজ না। এখানে টিকে থাকতে হলে আপনাকে যেমন যেকোনো কাজে এক্সপার্ট হতে হবে, এর বাইরেও ক্লায়েন্ট কমিউনিকেশনের জন্য ইংরেজীতে মুটামুটি দক্ষ হতে হবে, তাছাড়া একটা ক্লায়েন্টকে কিভাবে কাজ দিয়ে সন্তুষ্ট করা যায়। সেই বিষয়গুলোও শিখতে হবে। 

তাই ফ্রিল্যান্সিংএ আসার আগে বুঝতে ফ্রিল্যানিংটা আসলে কি। আমি অনবরত মেসেজ পাই যারা ফ্রিল্যান্সিং শিখতে আগ্রহী, কোথায় কাজ শিখবে, কি শিখবে ইত্যাদি ইত্যাদি। এগুলো নিয়ে ধীরে ধীরে আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে যতটুকু জানি সেই এক্সপেরিয়েন্স শেয়ার করবো। আশা করি আমার লেখাগুলো ভালো লাগবে। যদিও আমি লেখালেখিতে মোটেও এক্সপার্ট না। তবুও চেষ্টা করবো নিজের মতো করে আমার এক্সপেরিয়েন্স গুলো তুলে ধরার। 

যাই হোক, পোষ্টের ইমেজ দেখে কেউ যদি ভেবে থাকেন আপওয়ার্কে টপ রেটেড হয়েই কোর্স নিয়ে আসছি। তাহলে আপনার জন্য সমবেদনা। ভালো থাকবেন ও দোয়া করবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *