কিভাবে একটা প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খুঁজে বের করবেন

গত পোষ্টে লিখেছিলাম একজন বিগেইনার হিসেবে কাজ শিখে কিভাবে ফ্রিল্যান্সিং শুরু করতে পারেন। যেহেতু গত টপিকের মূল ফোকাস ছিলো ইউটিউব, তাই আজকের টপিক হচ্ছে কিভাবে একটা প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খুঁজে বের করবেন।

আমি ছোট্ট একটা উদাহরন দিয়ে শুরু করতে চাই। মনে করেন আপনি একটি জুতো কিনতে চাচ্ছেন। এখন আপনি যদি বাটার শো-রুম এ প্রবেশ করেন। তাহলে তাদের স্টকে আপনি যতোই প্রোডাক্ট দেখেন না কেনো, সেটা হতে পারে সুজ, স্যান্ডেল কিংবা যে কোন কিছুই। কিন্তু প্রতিটা প্রোডাক্ট’ই কিন্তু বাটা ছাড়া অন্য কোম্পানীর পাবেন না তাদের কাছে। ইভেন কাষ্টমার তাদের প্রোডাক্ট চয়েজ করুক বা না’ই করুক, তাতে কিছু যায় আসে না। তারা কিন্তু শুধু বাটা’ই সেল দেয়। একই ভাবে আপনি যদি এপেক্স, লটো, এডিডাস যেখানেই যান। সবারই সেইম সিস্টেম। 

এবার আপনি চলে গেলেন গুলিস্থানের কোনো ফুটপাতে। তাদের কাছে কিন্তু বিভিন্ন স্টাইলের, বিভিন্ন ব্র্যান্ডের জুতো পাবেন। ইভেন বাটা, এপেক্স থেকে আরো সুন্দর সুন্দর মডেলের জুতো পাবেন। তাও কম দামে। কারন তাদের মূল ফোকাস হচ্ছে কাস্টমার ধরে রাখা। সেটা মেটার করে না আপনি কোন ব্র্যান্ডের কিনছেন। আমি কোনোভাবে তাদেরকে ছোট করে দেখছি না। বরং এটা প্রশংসনীয় ও এটা তাদের বিজনেজ। শুধুমাত্র উদাহরন পারপাসে এটা তুলে ধরলাম। 

আশা করি এবার আর বুঝতে সমস্যা হবে না যে কিভাবে একটা প্রফেশনাল ইউটিউব চ্যানেল খুব সহজেই খুঁজে পাবেন। আপনি যখন কোনো গ্রাফিক্স ডিজাইন এক্সপার্ট এর চ্যানেলে যাবেন। তখন তার চ্যানেলে কেবল গ্রাফিক্স ডিজাইন রিলেটেড ভিডিও পাবেন। হতে পারে ভিন্ন ভিন্ন, যেমন ফ্লায়ার ডিজাইন, সোস্যাল ডিজাইন ইত্যাদি। একই ভাবে যখন কোনো ওয়েব ডেভেলপারের চ্যানেলে যাবেন। তার সব ভিডিও কেবল ওয়েব রিলেটেডই পাবেন। যখন কোনো ওয়ার্ডপ্রেস এক্সপার্ট এর চ্যানেলে যাবেন। তার সব ভিডিওই কেবল ওয়ার্ডপ্রেস রিলেটেড পাবেন। 

অপরদিকে আবার কিছু চ্যানেল হরেক রকম ভিডিও দিবে। বরং তারা নিজেরাই কোনো স্কিলে এক্সপার্ট না। বরং আপনার এটেনশন পাওয়ার জন্য, কিছু ভিউ সাবস্ক্রাইবার পাওয়ার জন্য যতো নিচে নামতে পারে নামবে। ভিডিও তে এমন এমন টাইটেল ইউজ করবে যে আপনাকে লোভে ফেলতে বাধ্য করবে। আপনিও তাদের ভিডিও দেখবেন। কিন্তু দিন শেষে হিসেব করে দেখবেন কিছুই শিখেন নাই বরং আপনার টাইম নষ্ট। 

আরেকটা গল্প বলি, আমি ফ্রিল্যান্সিং এ আসার আগে তখনও অনলাইনে ভালোই একটিভ থাকতাম। তো একজনের ভিডিও দেখে একটা অ্যাপ্স থেকে ইনকাম করা শিখে প্রথম দিনেই বিভিন্ন এড দেখে ২-৩ ডলারের মতো ইনকাম করে নিলাম। কিন্তু পরের দিন ঘুম থেকে উঠে দেখি একাউন্ট আবার ০ হয়ে গেছে। অথচ তাদের মিনিমাম উইথড্র লিমিট ছিলো সম্ভবত ৫০ ডলার। 

যাইহোক, ফ্রিল্যান্সিং একটা প্রফেশনাল পেশা। এখানে ৫ মিনিটে ইনকাম করতে হলে বা মোবাইল দিয়ে ফ্রিল্যান্সিং করতে হলে আপনাকে আগে সেই পজিশনে যেতে হবে। কিছু দিন আগের কথা হয়তো সবার মনে আছে, টিকটকের একাউন্ট খুলেও অনেকে অনেক আনিং করেছে। তারাও নিজেকে ফ্রিল্যান্সার দাবী করছে হয়তো। কিন্তু এগুলো কোনো প্রফেশনাল কাজ না। 

কার স্টুডেন্ট কতো ডলার আনিং করলো, বা এসব চ্যানেলে মোটিভেশনাল স্পিচ শুনে ব্রেইন ওয়াশ না হয়ে বরং যারা যেই সেক্টরে দক্ষ। তাদের চ্যানেলেই ভিড় করুন। অন্তত কিছু না কিছু শিখতে পারবেন। একজন স্টুডেন্ট/ফ্রিল্যান্সারদের আনিং এর পিছনে কতো না জানা গল্প থাকে যা কোনো ইউটিউবার বা মেন্টরই জানে না। 

অনেকে আবার এক ভিডিও তে এ টু জেড টাইটেল দেয়। আমার মনে হয় এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া সম্ভব যে একটা সেক্টরের এ টু জেড জানে। মেসি, রোনালদো তারা বিশ্ব সেরা ফুটবলার। কিন্তু এমন এমন বিষয় হয়তো এখনো আছে যা মেসি জানে কিন্তু রোনালদো জানে না, আবার রোনালদো জানে কিন্তু মেসি জানে না। 

আশা করি আরো ভেঙ্গে বলতে হবে না। একজন প্রফেশনাল ইউটিউবার কখনো চিন্তা করে না তার চ্যানেলে কতো জন ভিডিও দেখবে, কত জন সাবস্ক্রাইব করবে। বরং তিনি তার প্রফেশনালিটি ধরে রাখে সবসময়। তাই কারো ভিডিও দেখার আগে দেখে নিবেন সে নিজে ঐ বিষয়ে এক্সপার্ট কি না। নাকি আজাইরা চ্যানেলে ঢুকে আপনার সময় ও মেধা নষ্ট করছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *